বাবা আলেম। ভাই আলেম। আত্মীয়-স্বজন সব আলেম। আলেমের বংশে জন্মেছি।
ইলম-আমলের পরিবেশে বেড়ে উঠেছি। তাই আলেম হওয়ার জন্য কোন বেগ পেতে হয় নি। দ্বীনের
উপর চলার জন্য কোন কষ্ট স্বীকার করতে হয় নি। তাই আলেম হওয়ার বিশেষত্ব টের পাই না।
দ্বীন ও ঈমানের গুরুত্ব অনুধাবন করি না। কিন্তু যাদের দ্বীনের উপর চলার জন্য বহুত
বাঁধা-বিপত্তি উৎড়ে আসতে হয়েছে, আলেম হওয়ার জন্য যাদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে
তারা বুঝে দ্বীন-ঈমান কতটুকু মূল্যবান, আলেমের মর্যাদা কত অপরিসীম।
মাগরিবের পর দুটো ছেলে
এসেছিল। আগমী বছর এই বিভাগে ভর্তি হবে। দুজনেই আজানুলম্বিত জুব্বা পরিহিত। মাথায় সুন্নতি পাগড়ী। চেহারায়
ঈমান-আমানের একটা রৌশনের ঝিলিক ছিল। প্রথমে দেখেই ভেবেছিলাম, বড় কোন আলেমের সন্তান
হবে হয়তো। দ্বীনী পরিবেশের বেষ্টনীতে হয়ত বেড়ে উঠেছে। তাই সীরাত ও সুরতে দ্বীনের এমন নিশানা শোভা পাচ্ছে। কিন্তু পরে
জানতে পারলাম, ওরা জেনারেল লাইনে পড়লেখা করে। এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিল। ঐ লাইনে
থাকলে ঈমান-আমল নিয়ে বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই ওদের ইচ্ছে
জেনারেল লাইনের পড়ালেখা বাদ দিয়ে কওমী মাদরাসায় ভর্তি হবে এবং আলেম হবে।
ওদের কথা শুনে সত্যিই
চোখে পানি এসে গিয়েছিল। দুনিয়ার জীবনে এতদূর পথ হেঁটেও যখন কেউ দ্বীনের পথে ফিরে
আসে, দুনিয়ার সব মূল্যায়ণ পায়ে দলে যখন আখেরাতের রাস্তা ধরে তখন সত্যিই এটা
আল্লাহর বিশেষ রহমাত ছাড়া কিছু নয়। ওরা বুঝে দ্বীন কত সাধনার পর অর্জিত হয়। ঈমান
কত পরীক্ষার পর হাসিল হয়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে দ্বীনের গুরুত্ব বোঝার তাওফীক দিন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন